1. shubarna.9300@gmail.com : shubarna_9300 :
  2. info@sidor-bd.com : সিডর-বিডি :
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন

সংবিধান পুনর্লিখন, গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি সোচ্চার হচ্ছে, ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে
আজ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আত্মপ্রকাশ "জাতীয় নাগরিক পার্টির"

সিডর বিডি, অনলাইন ডেস্কঃ

  • আজ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আত্মপ্রকাশ
  • নাহিদের নেতৃত্বে ১৫১ সদস্যের কমিটি, শীর্ষ পদ চূড়ান্ত
  • শীর্ষনেতাদের সবার বয়স ত্রিশের নিচে
  • জুলাই শহীদ পরিবারের কাছে গণশপথ
  • প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন দলকে আমন্ত্রণ
          ———————————–মাহফুজ সাদি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে শুক্রবার নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটছে। নতুন দলের নাম হবে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ বা ‘ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি’ (এনসিপি)। নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে আহ্বায়ক কমিটি হচ্ছে, যার শীর্ষ পাঁচটি পদ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। নতুন দলের নেতৃত্ব জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদের কাছে গণশপথ নেবে এবং গণহত্যার বিচার, সংবিধান পুনর্লিখন, গণপরিষদের জোর দাবি নিয়ে ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিশাল জমায়েতের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করতে চলা এনসিপির আহ্বায়ক হচ্ছেন নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন। এ ছাড়া নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারীকে প্রধান সমন্বয়কারী, হাসনাত আবদুল্লাহকে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও সারজিস আলমকে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ টানা বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে কমিটির নেতাদের নাম ঘোষণা করা হবে।

আহ্বায়ক কমিটিতে আবদুল হান্নান মাসউদকে যুগ্ম সমন্বয়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক বা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্ত শারমিন, তাসনিম জারা, দপ্তর সম্পাদক মুনীরা শারমিনের নাম এসেছে। এই পদে আলোচনায় ছিলেন সাবেক শিবির নেতা আলী আহসান জুনায়েদ ও রাফে সালমান রিফাত। তারা নতুন দলে আসছেন না বলে জানিয়েছেন।

নতুন দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব পদে আরিফুল ইসলাম আদিব, নুসরাত তাবাসসুম ও আতাউল্লাহর আলোচনায় আছে। এ ছাড়া ছাত্রনেতাদের মধ্যে রাষ্ট্রচিন্তার সারোয়ার তুষার, গণঅধিকারের তরিকুল ইসলাম, সালেহ উদ্দিন সিফাতসহ আরও কয়েকজনকে নতুন দলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখা হতে পারে বলে সংগঠকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

একাধিক সূত্র আমার দেশকে নিশ্চিত করেছে, নতুন দলের ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে শুক্রবার আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে, পরে তৈরি করা হবে গঠনতন্ত্র। সেটিও টানা কয়েকদিনের ধারাবাহিক বৈঠকে অনেকটা চূড়ান্ত করা হয়েছে। গতকাল রাতে বাকিটাও চূড়ান্ত হয়। এতে মূল বিষয় হিসেবে থাকছে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো গণহত্যার দ্রুত ও ন্যায়বিচার, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপে কার্যকর রাষ্ট্রসংস্কার নিশ্চিত, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য কর্মসূচি নেওয়া, বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী সংবিধান পুনর্লিখন, নতুন সংবিধান তৈরি করতে গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন, গণপরিষদ নির্বাচন আইনসভা নির্বাচনের সঙ্গে একসঙ্গে অথবা আলাদাও হতে পারে। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

একাধিক সূত্রমতে, এনসিপির ঘোষণাপত্রে রাষ্ট্রকল্পের বহুদলীয় গণতন্ত্র, সাংস্কৃতিক সহাবস্থান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, পাচার ও লুটপাটবিরোধী উৎপাদনশীল অর্থনীতি উৎপাদনশীল অর্থনীতিসহ অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় পরিকল্পনাগুলো দার্শনিকভাবে তুলে ধরা হবে। এসব বিষয়ের বিস্তারিত থাকবে দলের কর্মসূচিতে। রমজানের মাঝামাঝি কর্মসূচি চূড়ান্ত হতে পারে। নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান, গণপরিষদের বিষয়টি থাকবে ঘোষণাপত্রে।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক কমিটি ১৫১-২০১ সদস্য বিশিষ্ট হতে পাতে পারে, যা আজই ঘোষণা করা হবে। দলীয় প্রতীক ও লোগো এখনো চূড়ান্ত হয়নি। জুলাই শহীদ ও আহতদের কাছে গণশপথের বিষয়টি প্রস্তাবনায় রয়েছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদ্য বিলুপ্ত যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার আমার দেশকে বলেন, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকল্প যেখানে জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে, তেমন একটি রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করাই হবে দলের আশু লক্ষ্য। পাচার ও লুটপাটবিরোধী উৎপাদনশীল অর্থনীতি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হবে। এর বাইরে দীর্ঘমেয়াদী আরও কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করবে দলটি।

ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের হাতে গড়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি গঠন করা। এর আহ্বায়ক ছিলেন নাহিদ ইসলাম। পরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ গঠন করে ক্রিয়াশীল সব ছাত্রসংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে তারা।

আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে রাজনৈতিক দল গঠন এবং গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ রেখে অভ্যুত্থানের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে গত ৮ সেপ্টেম্বর ৫৫ সদস্যের জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়। পরে তিন ধাপে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৮৭ জনে উন্নীত করা হয়।

দল সম্প্রসারণের অংশ হিসাবে গত কয়েক মাসে ১৫৯টি থানা কমিটি, ২৭৩টি উপজেলা কমিটি, ১৫টি মহানগর ওয়ার্ড কমিটি এবং ১০টি পেশাজীবী উইং ঘোষণা করতে পেরেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এখন এসব কমিটির প্রায় ৪০ হাজার কর্মী যুক্ত হয়েছে। তারা চাইলে নাগরিক কমিটিতে থাকতে বা নতুন দলে যুক্ত হতে পারবেন।

সূত্রমতে, উদারপন্থি, ইসলামপন্থি, ডানপন্থি, বামপন্থি এবং রাষ্ট্রের সংস্কারপন্থিদের সম্মিলন ঘটিয়ে একটি মধ্যমপন্থি রাজনৈতিক দল হবে এনসিপি। জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদের সামনে রেখে নতুন দলটির আত্মপ্রকাশ ঘটছে। দলের নাম ঘোষণার পর কমিটির ঘোষণা আসবে। তারপর গণশপথ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদ্য বিলুপ্ত জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক এস এম শাহরিয়ার আমার দেশকে বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে এই নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটছে। আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে এই দল কাজ করবে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার ও গণঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে এই দল সফল হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

দল গঠন প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নুসরাত তাবাস্সুম সাংবাদিকদের বলেন, নারী নেতৃত্বকে আলাদা করে দেখার ব্যাপার নয়। জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মানুষ দেখেছে যে, নারীরা প্রয়োজনের সময় কিভাবে সামনে এসে হাল ধরতে পারে। নেতৃত্বের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নারীরা ছিল আছে এবং সামনের দিনেও থাকবে। দেশ পুনর্গঠন ও বিনির্মাণে নারী-পুরুষ কারও জায়গা কম না। নতুন রাজনৈতিক দল অন্য যেকোনো প্ল্যাটফর্ম থেকে নারীদের ভূমিকা এবং অবস্থান নিশ্চিত করার ব্যাপারটা বেশি ভালোভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রক্ষা করবে।

একাধিক ছাত্রনেতা জানান, গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার বিলোপ, নতুন সংবিধান, জুলাই ঘোষণাপত্র এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে। আবার জনমত জরিপে সর্বাধিক মতামত এসেছে-একটি দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন সমাজ এবং সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মার্যাদাভিত্তিক দেশ গড়ার পক্ষে। ফলে আমাদের রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য ও কর্মসূচিতে বিষয়গুলো সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে।

নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য খান মুহাম্মদ মুরসালীন আমার দেশকে বলেন, ‘যেহেতু একটি গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করছি, তাই এই অভ্যুত্থানের মধ্যে জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা উঠে এসেছিল, সেগুলোকেই আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। এ ছাড়া আমরা একটি জনমত জরিপ করেছিলাম। সেই জরিপের মধ্য দিয়েও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। বিষয়গুলো আমাদের রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’

প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন দলকে আমন্ত্রণ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সংগঠকরা। পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ অভ্যুত্থানে যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানায় তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন দলের পক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়দের মধ্যে আব্দুল হান্নান মাসুদ, নুসরাত তাবাসসুম ও সাইফ মোস্তাফিজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেন। একই সঙ্গে সুশীল সমাজ, বিদেশি বন্ধু ও কূটনীতিকদের নিমন্ত্রণ করার কথা রয়েছে বলে জানায় তারা।

প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানানোর পর যমুনার বাইরে এসে আব্দুল হান্নান মাসউদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের দাওয়াত গ্রহণ করেছেন এবং শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সব রাজনৈতিক দল মিলেমিশেই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে। সবাই একসাথে যেন দেশের জন্য কাজ করতে পারে তিনি সেই পরিবেশ উপহার দেবেন।

সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা আজকে দুপুরের পর থেকেই দাওয়াতের প্রক্রিয়া শুরু করেছি এবং এটা মাত্র তিন দিনের প্রস্তুতিতে আমরা শুরু করেছি। আমাদের প্রস্তুতির কিছুটা অভাব রয়েছে, যার কারণে আমরা সবাইকে নিয়ে সব জায়গায় যেতে পারছি না। কাউকে মেইলের মাধ্যমে, কাউকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কাউকে সরাসরি গিয়ে আমরা দাওয়াত করছি।

বিএনপির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের কাছে চিঠি পৌঁছানোর পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও গণতন্ত্র মঞ্চ এসব দলকে সরাসরি চিঠি পৌঁছানোর চেষ্টা করার কথা বলেন তিনি। বলেন, আমাদের বিভিন্ন টিম বিভিন্ন জায়গায় দাওয়াত নিয়ে কাজ করছে।

গণআন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতদেরও অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষের উপস্থিতি চাচ্ছি। আমরা যেহেতু জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জনআকাঙ্খাকে ধারণ করে একটি পলিটিক্যাল পার্টি করতে চাচ্ছি, সেই জায়গা থেকে আমরা শহীদ পরিবারকে দাওয়াত করেছি, আহতদেরকে দাওয়াত করেছি।

সূত্রঃ আমার দেশ

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ক্যলেন্ডার থেকে পড়ুন

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮

পুরাতন সংবাদ পড়ুন