
সিডর বিডি, অনলাইন ডেস্কঃ
রাজশাহী, পাবনা, নাটোর ও কুষ্টিয়ার পদ্মা চরে রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হয়েছে পুলিশের বিশেষ অভিযান। চার জেলার এই যৌথ অভিযানে অংশ নিয়েছেন রাজশাহী ও খুলনা রেঞ্জের দেড় হাজার পুলিশ সদস্য।
রাজশাহী রেঞ্জের অধীন রাজশাহী, পাবনা ও নাটোরে অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। এখানে অংশ নিয়েছেন ১ হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য। খুলনা রেঞ্জের অধীন কুষ্টিয়ায় নামহীন এ অভিযানে অংশ নিয়েছেন আরও ৩০০ সদস্য।
সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মার চরে ‘কাকন বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী দলের তৎপরতা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, এই বাহিনীর সদস্যরা কথায় কথায় গুলি ছোড়ে, মানুষ হত্যা করে, ফসল ও বালু লুট করে, অপহরণ ও চাঁদাবাজি চালায়।
গত ২৭ অক্টোবর চর এলাকায় ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে এই বাহিনীর গুলিতে তিন কৃষক নিহত হন। ঘটনাটির পর বাহিনীর প্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় মামলা হয়।
এখন পর্যন্ত রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ায় এই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা দায়ের হয়েছে।
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, ভোর থেকেই অভিযান শুরু হয়। রাজশাহী, পাবনা ও নাটোরের পদ্মা চরাঞ্চলে একযোগে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ‘কাকন বাহিনী’র ২১ সদস্যকে।
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পদ্মার চরাঞ্চলে নদীপথ ও স্থলপথে একযোগে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হয়। লালপুরের সীমান্তবর্তী চার দিয়াড় বাহাদুরপুর, চর জাজিরা ও চর লালপুর এলাকায় ১৪টি নৌকায় ১০টি দলে ভাগ হয়ে অভিযান চলে। আটক ব্যক্তিদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে এবং জব্দ করা মালামালের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
চর দিয়াড় বাহাদুরপুরের মৎস্যজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ যাদের ধরে নিয়ে গেছে, তারা প্রায় সবাই কাকন বাহিনীর সঙ্গে জড়িত।
খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) শেখ জয়নুদ্দীনের নেতৃত্বে কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর চরগুলোয় সকাল ৫টা থেকে অভিযান শুরু হয়। এতে অংশ নিয়েছেন তিন শতাধিক পুলিশ সদস্য, তাদের সঙ্গে ছিলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।
অভিযানস্থল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) ফয়সাল মাহমুদ জানান, পদ্মার বিভিন্ন চরে লুকিয়ে থাকা ‘কাকন বাহিনী’সহ অন্যান্য সন্ত্রাসী দলকে ধরতেই এ অভিযান চলছে। ড্রোন দিয়ে কাশবন, কলাবাগান ও জঙ্গলের ভেতর নজরদারি চালানো হচ্ছে।
অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত চরাঞ্চলে কড়া নিরাপত্তা বলয় জারি থাকবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সূত্রঃ ইত্তেফাক